আত্মার ওজন

নাইম হোসেন ফারুকী 



ডক্টর ম্যাকডুগাল ১৯০১ সালে একটা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণের চেষ্টা করেন আত্মার ওজন ২১ গ্রাম। তাছাড়া, তিনি এও প্রমাণের চেষ্টা করেন, মানুষের আত্মা আছে, অন্য প্রাণীদের নেই।


তাঁর পরীক্ষার জন্য দরকার ছিল এমন সব রোগী যারা খুব কম নড়াচড়া করবেন মৃত্যুর সময়। ছয়জন মৃতপ্রায় মানুষ বেছে নেওয়া হয়, চারজন যক্ষ্মা রোগী, এক জন ডায়াবেটিস এর রোগী, একজন অজানা রোগের। মৃত্যুর আগে আগে এদের একটা ওজন মাপার মেশিনে ওঠানো হয়। 


মানুষের পরীক্ষার পর তিনি পনেরটা কুকুরের উপরও পরীক্ষা চালান। তার পরীক্ষার উপযুক্ত কুকুর তিনি পান নি, ধারণা করা হয় তিনি কুকুরদের বিষ খাওয়ান।


ফলাফল:

একজন মানুষ মৃত্যুর সময় ২১ গ্রামের মত ওজন হারায়। একজন প্রথমে ওজন হারায় কিন্তু পরে তার ওজন বেড়ে যায়। দুইজন মৃত্যুর সময় ওজন হারায়, কিন্তু পরে আরও বেশি ওজন হারাএক্সপেরিমেন্ত ডেটা তিনি নিজেই বাদ দেন পরীক্ষার ত্রুটির জন্য।


কুকুরদের তেমন কোন ওজন হারাতে দেখা যায় নি। 


স্বাভাবিক অবস্থায় ঘামের হিসাব বাদ দেওয়া হয়েছে ম্যাকডুগালের পরীক্ষা থেকে। ম্যাকডুগাল যন্ত্রে শুয়ে নিঃশ্বাস ত্যাগ করে দেখেছেন, ওজনের তেমন কোন হেরফের হয় নি। তাই মৃত্যুর সময় বেরিয়ে যাওয়া বাতাসের ওজন সামান্য ধরা হয়েছে।


ব্যাখ্যা:

ফিজিশিয়ান অগাস্টাস ক্লার্ক ম্যাকডুগালের পরীক্ষার ব্যাখ্যা দেন: মৃত্যুর সময় লাংস কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়, তাই শরীরের কুলিং সিস্টেম ফেইল করে। তাই মৃত্যুর সময় ঘামের পরিমাণ বেড়ে যায়, যেখান থেকে ২১ গ্রামের হিসাব আসে।

কুকুরদের ঘর্মগ্রন্থি না থাকায় তাদের কপালে আত্মা না থাকার অপবাদ জোটে।


তাছাড়াও একেক জনের একেক রকম ডেটা, মাত্র ছয়জনের উপর এক্সপেরিমেন্ট, তার উপর দুইটা ডেটা বাদ দেওয়া, এসব কারণে ম্যাকডুগালের এক্সপেরিমেন্ট সায়েন্টিফিক কমিউনিটির কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নি।    


সোর্স:

১.

https://www.snopes.com/fact-check/weight-of-the-soul/

২.

https://en.m.wikipedia.org/wiki/21_grams_experiment

৩.

http://rationallyspeaking.blogspot.com/2007/03/does-soul-weigh-21-grams.html?m=1


নাইম হোসেন ফারুকী, 

ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন