আবু রায়হান
মরুভূমি মানেই খালি বালুময় বৃহৎ এলাকা নয়।
১।
মরুভূমি শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে খুব শুষ্ক, ঝড়-বৃষ্টিহীন আর চারিদিকে ধু ধু বালিতে ঢাকা একটি বিস্তৃত অঞ্চল। বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় তিনভাগের এক ভাগ হলো মরুভূমি। ভৌগোলিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে সাধারণত চার ধরনের মরুভূমি দেখতে পাওয়া যায়।
এগুলো হলো, মেরু-অঞ্চলীয় মরুভূমি, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মরুভূমি, শীতপ্রধান মরুভূমি এবং শীত উপকূলবর্তী মরুভূমি।
২।
মরুভূমির সংজ্ঞায় এর বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সাধারণ অর্থে মরুভূমি বলতে এমন স্থানগুলোর কথা বোঝানো হয়ে থাকে, যা অত্যন্ত শুষ্ক, বৃষ্টিপাত যেখানে বিরল একটি ঘটনা এবং গাছপালা যেখানে জন্মে না বললেই চলে।সে হিসেবে বরফময় মেরু অঞ্চলও মরুভূমির কাতারে পড়ে।
মরুভূমিগুলোতে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০ সেন্টিমিটারেরও কম। পৃথিবীর মোট স্থলভাগের তিন ভাগের এক ভাগই মরুভূমি।
৩।
পৃথিবীর মোট মরুভূমির মাত্র ২০ শতাংশই বালুময়। মরুভূমির তীব্র গরমে একটি, দুটি ঘণ্টাও পার করা যে, কঠিন একটা কাজ সে তো সবারই জানা। তবে পৃথিবীতে এমন মরুভূমিও কম নয়, যেখানে ঠাণ্ডায় প্রাণ টিকিয়ে রাখা এক রকমের অসাধ্য কাজ।
বরফে ঢাকা এ ধরনের মরুভূমিগুলোকে শীতল মরুভূমি বলা হয়।
৪।
১ম-
অ্যান্টার্কটিকা হলো পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মরুভূমি এবং একইসাথে সর্ববৃহৎ শীতল মরুভূমি।
আর সর্ববৃহৎ উষ্ণ মরুভূমির নাম সাহারা। আয়তনের বিচারে সাহারা ৩য় বৃহত্তম।
২য় -তে
আছে উত্তর গোলার্ধের আর্কটিক শীতল মরুভূমি।
৩য় -তে
উত্তর আফ্রিকায় অবস্থিত সাহারা মরুভূমির, যার বিস্তৃতি ১২টি দেশে। এটি তৃতীয় বৃহত্তম।
৪র্থ স্থানে:
অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি।
৫ম স্থানে:
পশ্চিম এশিয়ার আরবীয় মরুভূমি।
1. অ্যান্টার্কটিকা:
আয়তন 14,000,000 (১ কোটি ৪০ লক্ষ বর্গ কি.মি. বা 5,500,000 (৫৫ লক্ষ বর্গমাইল)
2. আর্কটিক:
আয়তন 13,985,000 (১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৮৫হাজার বর্গ কি.মি. বা,
5,400,000 - ৫৪ লক্ষ বর্গমাইল।
বিস্তৃতি - Alaska, Canada, Finland, Greenland, Iceland, Norway, Russia and Sweden
3. সাহারা মরুভূমি:
আয়তন 9,000,000+ (৯০ লক্ষ বর্গ কি.মি.+ বা, 3,300,000- ৩৩ লক্ষ বর্গ মাইল+)
বিস্তৃতি > North Africa (Algeria, Chad, Egypt, Eritrea, Libya, Mali, Mauritania, Morocco, Niger, Sudan and Tunisia)
5।
আর্কটিক ও অ্যান্টার্কটিকা
পৃথিবীর দুই মেরুতে অবস্থিত দুটি অঞ্চল।
আর্কটিক সুমেরু বা উত্তর মেরুতে, অ্যান্টার্কটিকা দক্ষিণ মেরু বা কুমেরুতে অবস্থিত।
আর্কটিক:
আর্কটিক একটি বরফ দ্বারা আচ্ছাদিত বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চল। এই মহাসমুদ্র ঘিরে রয়েছে বরফ আচ্ছাদিত এক স্থলভূমি, যেখানে সত্যিকার অর্থে কোনো উদ্ভিদ নেই। উত্তর মেরু ও আর্কটিক সার্কেলের ভেতরে এই অঞ্চলটির অবস্থান।
অ্যান্টার্কটিকা:
ঠিক এর বিপরীতে দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত অ্যান্টার্কটিকা, যেটি মূলত একটি মহাদেশ। যা পুরোপুরি সমুদ্র দিয়ে পরিবেষ্টিত। আর্কটিক হলো সাদা ভাল্লুক এর অভয়ারণ্য, সেখানে পেঙ্গুইন দেখতে পাবেন না। অ্যান্টার্কটিকা আবার পেঙ্গুইনের আবাসভূমি, সেখানে শ্বেত ভাল্লুক নেই।
অ্যান্টার্কটিকার প্রায় ৯৮ শতাংশ এলাকা বরফে আচ্ছাদিত। এসব বরফ আস্তরণের নূন্যতম গভীরতা জানলে আঁতকে উঠতে হয়, প্রায় এক মাইল পুরু বরফের চাদরে আবৃত একটি মহাদেশ এটি! এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল, শুষ্ক ও বায়ু প্রবাহ পূর্ণ মহাদেশ। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে মেরু অঞ্চলে সারাবছরই তুষারপাত হয়, কিন্তু অ্যান্টার্কটিকা এতই শুষ্ক যে, এটিকে বলা যায় একটি মরুভূমি!
এর উপকূলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ২০০ মিলিমিটার। মূল ভূমিতে তো আরো কম।
সোর্স:
1.
https://en.m.wikipedia.org/wiki/List_of_deserts_by_area
2.https://www.google.com/amp/s/www.livescience.com/amp/23140-sahara-desert.html
আবু রায়হান,
ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন